অনেকদিন পর খরগোশ আর কচ্ছপের আবার দেখা। খরগোশ বললো, কিরে কচ্ছপ মনে আছে সেই দৌড় প্রতিযোগিতার কথা, আমি একটু ঘুমিয়েছিলাম বলে তুই কেমন চালাকি করে জিতে গেলি, নইলে কিন্তু বল আমিই জিততাম সেদিন। আর তুই যেই ধীরে দৌড় দিস, অমন দৌড় দিয়ে কি আর সবসময় জিতা যায়। এই যেমন আমাকেই দেখ না কত দ্রুত দৌড়াতে পারি। আরেকবার প্রতিযোগিতা হলে দেখিস আমিই জিতে যাব। কচ্ছপ বললো, চল তাহলে আবার দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করি দেখি কে জিতে। যেই ভাবা সেই কাজ, দিনক্ষন ঠিক করা হল। দু’জনেই প্রস্তুত। বনের অদূরে দাগ কেটে সীমানা টানা হল। সেখানে যে আগে পৌছবে সেই হবে আজকের জয়ী। সময় শুরু হল – খরগোশতো দ্রুত দৌড়াতে শুরু করলো, এবার যে তাকে জিততেই হবে। কোন বিশ্রামের দরকার হবেনা এইবার তার। গতবার এই ভুল করেই সে হেরে গিয়েছিল। যদিও নিজের দোষ সে কচ্ছপ মশাইকে বলতে নারাজ। তবে যাই হোক এবার অবশ্য কচ্ছপের থেকে অনেক এগিয়ে সে। আর যাই হোক কচ্ছপের আর তাকে হারানো সম্ভব হবে না। খরগোশের সাথে লড়তে আসার ফল আজই বুজবে সেই ধীরে চলা কচ্ছপ। মনে মনে ভাবতেই হঠাৎ সামনে তাকিয়ে খরগোশ মশাইতো রিতিমত অবাক, একি অবস্থা! গতরাতের বৃষ্টির জলে যে মাঠ ভরে গেছে। এখন কি করে সে জল ভর্তি মাঠ পার হবে। জলে চলা যে আর তার পক্ষে সম্ভব নয়। এদিকে কচ্ছপের জীবন যায় যায় দশা। অর্ধেক পৌছতেই সে হাপিয়ে উঠেছে। তবে মনের জোর একটুও কমেনি তার, যতই সে ধীরে চলুকনা কেন জিতার হাল তো সে আর এমনি ছেড়ে দিবে না। দীর্ঘ সময়ের পথ পারি দিয়ে কচ্ছপ এইবার সেই জলে ভরা মাঠের সামনে। খরগোশের জলে চলা সম্ভব না হলেও কচ্ছপ এর কিন্তু জলে চলতে মোটেও সমস্যা হয় না। কচ্ছপ মশাই একটু ও অপেক্ষা না করে জল ভর্তি মাঠে নেমে পড়লো আর কিছুক্ষনের মাঝে সহজেই পারও হয়ে গেল। অবশেষে কঠিন এই দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে আবারো কচ্ছপই জিতে গেল। প্রতিযোগিতার শেষে তারা দুজনেই তাদের দুজনের দুর্বলতা গুলো বুজতে পেরেছিল।কচ্ছপ যেমন বুজতে পেরেছিল জলে চলা তার জন্য সহজ হলেও খরগোশের মত দ্রুত চলা তার পক্ষে সম্ভব নয় অন্যদিকে খরগোশ বুজতে পেরেছিল যে সে দ্রুত চলতে জানলেও পানিতে চলা তার সাধ্যি নয়। সবশেষে তারা পুনরায় আবার একত্র হয়েছিল। তখন কিন্তু খরগোশ অর্ধ পথ কচ্ছপ কে তার পিঠে চড়িয়ে পার করে দিয়েছিল আর বাকি জলে ভর্তি অর্ধেক পথ কচ্ছপ তার পিঠে খরগোশ কে বসিয়ে পার করে দিয়েছিল।