সময়

সময়

সময়

Time
Time

      আর কিছুহ্মন পরই ঘড়ির কাটা বারোটায় পৌছবে। চারিদিকে হৈ চৈ পরে গেছে, নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় সবাই। এদিকে আজও তার কান্না পাচ্ছে, কারন এই বছরটা ভাল যায়নি তার, কিছু মানুষের ব্যবহার আর নিজের সাথে ঘটে যাওয়া কিছু বিষয় যা হওয়ার ছিলনা সব মিলিয়ে খুব রাগ হচ্ছে তার, অন্যের নয় নিজের উপর। বারবার তার মনে হচ্ছে আমি পারলামনা, গভীর হতাশা তার মাঝে। এবারতো সে রীতিমত দোষ দিয়ে বসেছে স্রষ্টাকে। তিনি কেন এমন করল আমার সাথে, একটু ও ভালবাসেনা আমাকে, আামাকেই শুধু কষ্ট দেয়। কাল থেকে আর সে স্রষ্টাকে ডাকবে না । ঘরের জানালার পাশেই মন খারাপ করে বসে আছে সে। এমন সময় দূর থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসছে। পাশের বাড়ির কেউ হবে, শব্দ শুনতে পেয়ে সে বাহিরে বেড়িয়ে গেল, একি অবাক কান্ড সেই আর্তনাদতো তার পরিচিত এক বৃদ্ধ লোকের, যাকে সে চিনে, এইতো আজ সকালেই সে কথা বলেছিল উনার সাথে। জানতে চাইলো কি হয়েছে, এমন আর্তনাদ, পাশ থেকে একজন বললো, আগুন লেগে তার শরীরের বেশ খানিকটা অংশ পুড়ে গেছে, সেরে উঠতে মাস খানিক লেগে যাবে। কালকে উনার ছেলেরা আসবে অথচ আজকেই এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল। মনে হচ্ছে লোকটি তাকে চিনতে পেরেছে,কিছু হয়তো বলতে চায়। সে ধীরে লোকটির কাছে এগিয়ে গেল আর জানতে চাইলো আপনার কিছু লাগবে ? লোকটি বললো আামাকে একটু অযু করতে সাহায্য করবে, সে বলল এই অবস্থায় আপনার পানি লাগানো উচিত হবেনা। লোকটি বললো আমি তায়াম্মুম করে নিব। কিছুহ্মনের জন্য সে চুপ হয়ে গেল, এত কষ্ট পেয়েও আপনার স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসা কমে যাচ্ছে না – সে বললো, এমন একটা সময় স্রষ্টা আপনাকে এত কষ্ট দিচ্ছে, আপনি তারপর ও তাকে ভুলে যাচ্ছেননা কেন?  লোকটি বললো তিনি যা করেন, ভালোর জন্যই করেন।বিপদে ধৈর্য্য ধারন করা উচিত। তুমি কি তোমার ভাল সময়ের জন্য স্রষ্টার প্রশংসা করেছ তবে বিপদে পরলে কেন তাঁকে দোষারোপ করবে। সময়ের কাটা এখন বারোটাতে , এখন তার আর খারাপ লাগছেনা। যা আগে ভেবে কষ্ট পেয়েছিল তার কিছুই মনে নেই তার। স্রষ্টার প্রতি যে রাগ ছিল তাও সে ভুলে গেছে। ভাবছে , হয়তো সে নতুন একটি দিন পাবে কিছু করার, যা আজও কেউ পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করছে।

একতা

একতা

একতা

Secrect to win together
Secrect to win together

       অনেকদিন পর খরগোশ আর কচ্ছপের আবার দেখা। খরগোশ বললো, কিরে কচ্ছপ মনে আছে সেই দৌড় প্রতিযোগিতার কথা, আমি একটু ঘুমিয়েছিলাম বলে তুই কেমন চালাকি করে জিতে গেলি, নইলে কিন্তু বল আমিই জিততাম সেদিন। আর তুই যেই ধীরে দৌড় দিস, অমন দৌড় দিয়ে কি আর সবসময় জিতা যায়। এই যেমন আমাকেই দেখ না কত দ্রুত দৌড়াতে পারি। আরেকবার প্রতিযোগিতা হলে দেখিস আমিই জিতে যাব। কচ্ছপ বললো, চল তাহলে আবার দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করি দেখি কে জিতে। যেই ভাবা সেই কাজ, দিনক্ষন ঠিক করা হল। দু’জনেই প্রস্তুত। বনের অদূরে দাগ কেটে সীমানা টানা হল। সেখানে যে আগে পৌছবে সেই হবে আজকের জয়ী। সময় শুরু হল – খরগোশতো দ্রুত দৌড়াতে শুরু করলো, এবার যে তাকে জিততেই হবে। কোন বিশ্রামের দরকার হবেনা এইবার তার। গতবার এই ভুল করেই সে হেরে গিয়েছিল। যদিও নিজের দোষ সে কচ্ছপ মশাইকে বলতে নারাজ। তবে যাই হোক এবার অবশ্য কচ্ছপের থেকে অনেক এগিয়ে সে। আর যাই হোক কচ্ছপের আর তাকে হারানো সম্ভব হবে না। খরগোশের সাথে লড়তে আসার ফল আজই বুজবে সেই ধীরে চলা কচ্ছপ। মনে মনে ভাবতেই হঠাৎ সামনে তাকিয়ে খরগোশ মশাইতো রিতিমত অবাক, একি অবস্থা! গতরাতের বৃষ্টির জলে যে মাঠ ভরে গেছে। এখন কি করে সে জল ভর্তি মাঠ পার হবে। জলে চলা যে আর তার পক্ষে সম্ভব নয়। এদিকে কচ্ছপের জীবন যায় যায় দশা। অর্ধেক পৌছতেই সে হাপিয়ে উঠেছে। তবে মনের জোর একটুও কমেনি তার, যতই সে ধীরে চলুকনা কেন জিতার হাল তো সে আর এমনি ছেড়ে দিবে না। দীর্ঘ সময়ের পথ পারি দিয়ে কচ্ছপ এইবার সেই জলে ভরা মাঠের সামনে। খরগোশের জলে চলা সম্ভব না হলেও কচ্ছপ এর কিন্তু জলে চলতে মোটেও সমস্যা হয় না। কচ্ছপ মশাই একটু ও অপেক্ষা না করে জল ভর্তি মাঠে নেমে পড়লো আর কিছুক্ষনের মাঝে সহজেই পারও হয়ে গেল। অবশেষে কঠিন এই দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে আবারো কচ্ছপই জিতে গেল। প্রতিযোগিতার শেষে তারা দুজনেই তাদের দুজনের দুর্বলতা গুলো বুজতে পেরেছিল।কচ্ছপ যেমন বুজতে পেরেছিল জলে চলা তার জন্য সহজ হলেও খরগোশের মত দ্রুত চলা তার পক্ষে সম্ভব নয় অন্যদিকে খরগোশ বুজতে পেরেছিল যে সে দ্রুত চলতে জানলেও পানিতে চলা তার সাধ্যি নয়। সবশেষে তারা পুনরায় আবার একত্র হয়েছিল। তখন কিন্তু খরগোশ অর্ধ পথ কচ্ছপ কে তার পিঠে চড়িয়ে পার করে দিয়েছিল আর বাকি জলে ভর্তি অর্ধেক পথ কচ্ছপ তার পিঠে খরগোশ কে বসিয়ে পার করে দিয়েছিল।